প্রতিবেশী কারা এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সা:-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,
আমাদের আশপাশের ৪০ বাড়ি পর্যন্ত সবাই প্রতিবেশী। প্রতিবেশীর অধিকার হাক্কুল
এবাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহপাঠী, কর্মক্ষেত্রে
সহকর্মী, যাত্রাপথে সহযাত্রীও প্রতিবেশীর অন্তর্ভুক্ত।
প্রতিবেশীর প্রকারভেদ : প্রতিবেশী তিন প্রকার : ১. মুসলিম আত্মীয় প্রতিবেশী; ২. মুসলিম অনাত্মীয় প্রতিবেশী; ৩. অমুসলিম প্রতিবেশী।
প্রতিবেশীর অধিকার আমানতস্বরূপ : আমানত রক্ষা করা যেমন মুমিনদের জন্য আবশ্যক তেমনি প্রতিবেশীর অধিকার পূর্ণ করাও অবশ্যক। প্রতিবেশীর সম্পদ বা কথা যেকোনো ধরনের আমানত হিফাজত করতে হবে।
সর্বদা প্রতিবেশীর কল্যাণ কামনা করা : পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানুষের কল্যাণের জন্য তোমাদের আবির্ভাব, তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে।’ রাসূল সা: বলেছেন, ‘যে মানুষের কল্যাণ চিন্তা করে না সে আমার উম্মত নহে।’ এখানে একজন মুসলমানকে সব মানুষের কল্যাণ কামনার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘অন্যের কল্যাণ কামনাই হচ্ছে দ্বীন’ এবং ‘মুসলমান হচ্ছেন তিনি যার মুখ ও হাত থেকে অন্যজন নিরাপদ থাকে।’
সদাচরণ পাওয়ার অধিকার : প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ ও ভালো ব্যবহার করা একজন মুসলমানের অন্যতম কর্তব্য। সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা উজাড় করে দিয়ে প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক স্খাপন করা ও সদ্ভাব বজায় রাখা অপরিহার্য। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি এটা পছন্দ করে যে, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল তাকে ভালোবাসুক, সে যেন নিজের প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করে। রাসূল সা: বলেছেন, ‘জিবরিল আমাকে প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করার জন্য এত ঘন ঘন উপদেশ দিতে থাকেন যে, আমি ভেবেছিলাম হয়তো শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশীকে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করা হবে।’
প্রতিবেশীর বাড়িতে ঢোকার শিষ্টাচার : হে মুমিনগণ! তোমরা নিজের বাড়ি ছাড়া অন্যদের বাড়িতে ঢুকে পড়ো না যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নাও অথবা আলাপ-পরিচয় না করো এবং বাড়ির লোকজনকে সালাম না করো। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখো বা উপদেশ গ্রহণ করো। তবে যদি তোমরা বাড়িতে কাউকে না পাও, তাহলে তাতে ঢুকে পড়ো না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের অনুমতি না দেয়া হয়। আর যদি তোমাদের ভেতর থেকে বলা হয় ফিরে যাও, তবে তোমরা ফিরে যাবে। এতে তোমাদের জন্য অনেক পবিত্রতা রয়েছে এবং তোমরা যা কিছু করো, আল্লাহ তা ভালোভাবেই জানেন’ (সূরা নূর, আয়াত ২৭-২৯)।
প্রতিবেশীর সাথে সালাম বিনিময় : সালাম শব্দের অর্থ শান্তি। একজন মুসলিমের ওপর অপর মুসলিমের ছয়টি অধিকার রয়েছে। যথা : সালামের জবাব দেয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজায় অংশগ্রহণ করা, দাওয়াত কবুল করা, ওয়াদা পূরণ করা ও হাঁচিদানকারীর জবাব দেয়া। আসসালামু আলাইকুমের অর্থ হলো, আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। অর্থাৎ সালামের মাধ্যমে একে অপরকে শান্তি ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিচ্ছে এবং সমাজে শান্তি ছড়িয়ে পড়ছে। তদুপরি সালামের মাধ্যমে ছোট-বড় ও ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান হন্সাস পায়।
পারস্পরিক এহতেসাব করা : প্রতিবেশীর কোনো দোষত্রুটি পরিলক্ষিত হলে সংশোধনের উদ্দেশ্যে তাকে খোলাখুলিভাবে একান্তে বলতে হবে এবং অন্যজন নীরবে শুনে সংশোধন হয়ে যাবে। রাসূল সা: বলেন, এক মুমিন অপর মুমিনের আয়নাস্বরূপ। আয়না যেমন দেহের দোষত্রুটি ধরে দেয় তেমন এক ভাই অপর ভাইয়ের দোষত্রুটি ধরে দেবে।
প্রতিবেশীকে সাহায্য সহযোগিতা করা : রাসূল সা: বলেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের একটি প্রয়োজন পূরণ করল আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার সব প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন। তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা তোমাদের ভাইকে সাহায্য করো সে অত্যাচারী হোক অথবা অত্যাচারিত হোক।’ অর্থাৎ প্রতিবেশী যদি অত্যাচারী হয়, তবে তাকে অত্যাচার থেকে বিরত রাখার মাধ্যমে সাহায্য করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পরস্পরকে ভালো কাজ ও খোদাভীরুতায় সাহায্য করবে এবং অপরাধমূলক কাজে অসহযোগিতা করবে।’ সাহায্য ও ঋণ চাইলে দিতে হবে। প্রতিবেশী পরামর্শ চাইলে সুপরামর্শ দিতে হবে।
মৌলিক চাহিদা পূরণ করা : আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তাদের সম্পদে রয়েছে প্রার্থী ও বঞ্চিতজনের অধিকার।’ ইবনে আব্বাস রা: বলেন, আমি রাসূল সা:-কে বলতে শুনেছি : ‘সেই ব্যক্তি মুমিন নয়, যে তৃপ্তিসহকারে আহার করে অথচ তার প্রতিবেশী তার পাশেই অনাহারে থাকে’ (মিশকাত)। রাসূলুল্লাহ সা: আরো বলেছেন, ‘দরিদ্র প্রতিবেশী কিয়ামতের দিন ধনী প্রতিবেশীকে জাপটে ধরে বলবে : হে প্রভু, এই ভাইকে তুমি সচ্ছল বানিয়েছিলে এবং সে আমার নিকটেই থাকত; কিন্তু আমি ভুখা থাকতাম আর সে পেটপুরে খেত। তাকে জিজ্ঞেস করো, কেন সে আমার ওপর দরজা বìধ করে রাখত এবং আমাকে বঞ্চিত করত।
প্রতিবেশীর খোঁজখবর নেয়া : রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, হে আবুজর, তুমি যখন তরকারি রান্না করো তখন তাতে পানি বেশি করে দাও এবং তা দিয়ে প্রতিবেশীর খবর নাও (মুসলিম)। হজরত ইবনে উমরের একজন ইহুদি প্রতিবেশী ছিল। যখনই তার বাড়িতে ছাগল জবাই হতো, তিনি বলতেন, আমার ইহুদি প্রতিবেশীকে কিছু গোশত দিয়ে আস (আবু দাউদ, তিরমিজি)।
বিবাদ মীমাংসা করা : পারস্পরিক বিবাদ মীমাংসা ও সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা প্রতিবেশীর নৈতিক দায়িত্ব। আল্লাহতায়ালা বলেন, “যদি মুমিনদের দু’টি দল ঝগড়াবিবাদে লিপ্ত হয়, তবে তাদের মধ্যে ফায়সালা করবে।”
নিমন্ত্রণ করা : বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে এবং বিশেষ দিনে প্রতিবেশীকে নিমন্ত্রণ করা কর্তব্য। এ ক্ষেত্রে সমাজের ধনী-গরিব সবাইকে সমান চোখে দেখতে হবে।
উপঢৌকন প্রদান করা : উপঢৌকন আদান-প্রদানের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়, ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় ও দ্বন্দ্ব নিরসন হয়। রাসূল সা: বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পরকে ভালোবাস এবং উপঢৌকন দাও।’ রাসূলুল্লাহ সা: আরো বলেন, ‘হে মুসলিম নারীগণ, কোনো প্রতিবেশিনী অপর প্রতিবেশিনীকে যত সামান্য উপহারই দিক, তাকে তুচ্ছ মনে করা উচিত নয়, এমনকি তা যদি ছাগলের একটা খুরও হয়’ (বুখারি, মুসলিম)।
নিকটতম প্রতিবেশীর অগ্রাধিকার : হজরত আয়েশা রা: বলেন, আমি বললাম, হে রাসূলুল্লাহ, আমার দু’জন প্রতিবেশী রয়েছে, তন্মধ্যে কার কাছে উপহার পাঠাব? রাসূলুল্লাহ সা: বললেন, তাদের মধ্যে যে জনের দরজা তোমার থেকে নিকটতর তার কাছে।
দোষত্রুটি গোপন রাখা : প্রতিবেশীর দ্বারা কোনো দোষত্রুটি সংঘটিত হলে তা গোপন রাখা একজন মুসলমানের অপরিহার্য কর্তব্য। রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষত্রুটি গোপন রাখবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষত্রুটি গোপন রাখবেন।’
নিরাপত্তা দান করা : প্রতিবেশীর জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা আবশ্যক। রাসূল সা: বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা তোমাদের ওপর তোমাদের জান, মাল ও সম্পদ হরণ করা হারাম করে দিয়েছেন।’ রাসূল সা: আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তির অত্যাচার থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয় সে মুমিন নয়।’
দু:খ ও বিপদে সান্তবনা প্রদান : প্রতিবেশীর কোনো বিপদ দেখা দিলে তা থেকে তাকে উদ্ধার করা প্রতিবেশীর দায়িত্ব ও কর্তব্য। বিভিন্ন প্রকার বিপদ আপদে তাকে সান্তবনা দিতে হবে এবং তাদের সুখে আনন্দ প্রকাশ করতে হবে।
ঝগড়া বিবাদ ও কলহে লিপ্ত না হওয়া : এক ব্যক্তি রাসূল সা:-কে বলল, ‘হে রাসূলুল্লাহ, অমুক মহিলা প্রচুর নফল নামাজ, রোজা ও সদকার জন্য প্রসিদ্ধ কিন্তু প্রতিবেশীকে কটুকথা বলার মাধ্যমে কষ্ট দেয়। রাসূলুল্লাহ সা: বললেন, সে জাহান্নামে যাবে। লোকটি আবার বললেন, হে রাসূলুল্লাহ অমুক মহিলা সম্পর্কে খ্যাতি রয়েছে যে, সে খুব কমই নফল নামাজ, রোজা ও সদকা করে; কিন্তু নিজের জিহ্বা দিয়ে প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় না। রাসূল সা: বললেন, সে জান্নাতে যাবে।’ রাসূলুল্লাহ সা: আরো বলেছেন, কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে দুই ব্যক্তির মামলা আল্লাহর আদালতে বিচারার্থে পেশ করা হবে তারা হবে দু’জন প্রতিবেশী (মিশকাত)।
ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধান : প্রতিবেশীর ইজ্জতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে, কোনোভাবেই তার সম্মানের হানি করা যাবে না। কাউকে হেয় বা ছোট করা ও মন্দ নামে ডাকা যাবে না। রাসূল সা: বলেছেন, তিনটি গুনাহ সবচেয়ে ভয়াবহ : আল্লাহর সাথে শিরক করা, অভাবের ভয়ে সন্তানকে হত্যা করা ও প্রতিবেশীর স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করা (বুখারি, মুসলিম, নাসায়ি, তিরমিজি)।
গৃহস্খালির ছোটখাটো জিনিস ধার দেয়া : একজন মানুষ সব দিক থেকে পরিপূর্ণ হতে পারে না। সূরা মাউনের ৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘ধ্বংস তাদের জন্য যারা তাদের প্রতিবেশীকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস দিতে চায় না।’
প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়া : প্রতিবেশীর অসুবিধা হয় এমন কাজ করা যাবে না, যেমন : কটুকথা বলা, নিন্দা করা, গোয়েন্দাগিরি করা, গিবত করা, পরনিন্দা করা, তিরস্কার করা, উত্ত্যক্ত করা, গালি দেয়া, কুৎসা রটানো, খোঁটা দেয়া, গোলযোগ ও মনোমালিন্য সৃষ্টি করা, উপহাস করা, ছিদ্রান্বেষণ করা ইত্যাদি। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়, জিজ্ঞেস করা হলো : হে রাসূলুল্লাহ কে? তিনি বললেন, যার প্রতিবেশী তার কষ্টদায়ক আচরণ থেকে নিরাপদ থাকে না।’ রাসূলুল্লাহ সা: আরো বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস করে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।’ ফলের খোসা এমনভাবে ফেলতে হবে যাতে করে পাশের দরিদ্র প্রতিবেশীর শিশু তা দেখে কষ্ট না পায়।
হজরত সাহল বিন আবদুল্লাহ তাসতারির ঘটনা : প্রতিবেশীর প্রতি সহিষäুতার পরিচয় দেয়া মহৎ কাজ। হজরত সাহল বিল আবদুল্লাহ তাসতারি র:-এর একজন অগ্নি উপাসক প্রতিবেশী ছিল। প্রতিবেশীর ঘর থেকে প্রতিদিন প্রচুর ময়লা-আবর্জনা তার অলক্ষে ঘরে এসে পড়ত। কিন্তু সে জন্য তিনি প্রতিবেশীর কাছে কোনো অভিযোগ করতেন না। দিনের বেলা আবর্জনা জমা করে ঢেকে রাখতেন এবং রাতে বাইরে ফেলে দিতেন। সাহলের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলে তিনি তার প্রতিবেশীকে ডেকে আবর্জনার স্তূপ দেখিয়ে বললেন, আমার মৃত্যু ঘনিয়ে না এলে আপনাকে এটা দেখাতাম না। আমার আশঙ্কা যে, আমার মৃত্যুর পর আমার পরিবারের আর কেউ আমার মতো সহনশীলতা দেখাতে পারবে না। তাই আপনাকে দেখালাম। আপনি যা ভালো মনে হয় করুন। প্রতিবেশী অগ্নি উপাসকের বিস্ময়ের অবধি রইল না। সে সাহলের হাতে হাত রেখে ইসলাম গ্রহণ করল।
ইসলাম ও অসাম্প্রদায়িকতা : রাসূল সা: পৃথিবীর মানুষকে বললেন, সব মানুষ সমান। সবাই একজন আরেক জনের আত্মীয়। সবার বাঁচার অধিকার রয়েছে। কারো ওপর কোনো অন্যায় করা যাবে না। মদিনা সনদের একটি ধারায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম পালন করতে পারবে। কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। পৃথিবীতে এত আগে এর চেয়ে অসাম্প্রদায়িক ঘোষণা আর কেউ দিতে পারেনি। কুরআনের সূরা বাকারার ২১৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘পৃথিবীর সব মানুষ তোমরা একটা মাত্র সম্প্রদায়।’ সূরা মুমিনুনের ৫২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের এই ধর্ম সম্প্রদায় একই জাতিভুক্ত।’ সুতরাং যে মুসলমান তার সাম্প্রদায়িক হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
উপসংহার : একবার এক ব্যক্তি রাসূল সা:-এর কাছে এসে বললন্ধ হে রাসূল, আমাকে এমন একটি কাজ বলে দিন, যা করলে আমি জান্নাতে যেতে পারব। রাসূল সা: বললেন, পরোপকারী হও। সে বলল, আমি কিভাবে বুঝব পরোপকারী হয়েছি কি না? রাসূল সা: বললেন, তোমার প্রতিবেশীর কাছে জিজ্ঞেস করো সে যদি বলে যে, তুমি পরোপকারী, তাহলে তুমি পরোপকারী (বায়হাকি)। মোটকথা একজন মুসলমান প্রতিবেশীর অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিময় সমাজ গঠনে এগিয়ে আসবে।
তথ্যসূত্র: http://ipcblogger.net
প্রতিবেশীর প্রকারভেদ : প্রতিবেশী তিন প্রকার : ১. মুসলিম আত্মীয় প্রতিবেশী; ২. মুসলিম অনাত্মীয় প্রতিবেশী; ৩. অমুসলিম প্রতিবেশী।
প্রতিবেশীর অধিকার আমানতস্বরূপ : আমানত রক্ষা করা যেমন মুমিনদের জন্য আবশ্যক তেমনি প্রতিবেশীর অধিকার পূর্ণ করাও অবশ্যক। প্রতিবেশীর সম্পদ বা কথা যেকোনো ধরনের আমানত হিফাজত করতে হবে।
সর্বদা প্রতিবেশীর কল্যাণ কামনা করা : পবিত্র কুরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানুষের কল্যাণের জন্য তোমাদের আবির্ভাব, তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে।’ রাসূল সা: বলেছেন, ‘যে মানুষের কল্যাণ চিন্তা করে না সে আমার উম্মত নহে।’ এখানে একজন মুসলমানকে সব মানুষের কল্যাণ কামনার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘অন্যের কল্যাণ কামনাই হচ্ছে দ্বীন’ এবং ‘মুসলমান হচ্ছেন তিনি যার মুখ ও হাত থেকে অন্যজন নিরাপদ থাকে।’
সদাচরণ পাওয়ার অধিকার : প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ ও ভালো ব্যবহার করা একজন মুসলমানের অন্যতম কর্তব্য। সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা উজাড় করে দিয়ে প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক স্খাপন করা ও সদ্ভাব বজায় রাখা অপরিহার্য। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, যে ব্যক্তি এটা পছন্দ করে যে, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল তাকে ভালোবাসুক, সে যেন নিজের প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করে। রাসূল সা: বলেছেন, ‘জিবরিল আমাকে প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করার জন্য এত ঘন ঘন উপদেশ দিতে থাকেন যে, আমি ভেবেছিলাম হয়তো শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশীকে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করা হবে।’
প্রতিবেশীর বাড়িতে ঢোকার শিষ্টাচার : হে মুমিনগণ! তোমরা নিজের বাড়ি ছাড়া অন্যদের বাড়িতে ঢুকে পড়ো না যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নাও অথবা আলাপ-পরিচয় না করো এবং বাড়ির লোকজনকে সালাম না করো। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখো বা উপদেশ গ্রহণ করো। তবে যদি তোমরা বাড়িতে কাউকে না পাও, তাহলে তাতে ঢুকে পড়ো না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমাদের অনুমতি না দেয়া হয়। আর যদি তোমাদের ভেতর থেকে বলা হয় ফিরে যাও, তবে তোমরা ফিরে যাবে। এতে তোমাদের জন্য অনেক পবিত্রতা রয়েছে এবং তোমরা যা কিছু করো, আল্লাহ তা ভালোভাবেই জানেন’ (সূরা নূর, আয়াত ২৭-২৯)।
প্রতিবেশীর সাথে সালাম বিনিময় : সালাম শব্দের অর্থ শান্তি। একজন মুসলিমের ওপর অপর মুসলিমের ছয়টি অধিকার রয়েছে। যথা : সালামের জবাব দেয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজায় অংশগ্রহণ করা, দাওয়াত কবুল করা, ওয়াদা পূরণ করা ও হাঁচিদানকারীর জবাব দেয়া। আসসালামু আলাইকুমের অর্থ হলো, আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। অর্থাৎ সালামের মাধ্যমে একে অপরকে শান্তি ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিচ্ছে এবং সমাজে শান্তি ছড়িয়ে পড়ছে। তদুপরি সালামের মাধ্যমে ছোট-বড় ও ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান হন্সাস পায়।
পারস্পরিক এহতেসাব করা : প্রতিবেশীর কোনো দোষত্রুটি পরিলক্ষিত হলে সংশোধনের উদ্দেশ্যে তাকে খোলাখুলিভাবে একান্তে বলতে হবে এবং অন্যজন নীরবে শুনে সংশোধন হয়ে যাবে। রাসূল সা: বলেন, এক মুমিন অপর মুমিনের আয়নাস্বরূপ। আয়না যেমন দেহের দোষত্রুটি ধরে দেয় তেমন এক ভাই অপর ভাইয়ের দোষত্রুটি ধরে দেবে।
প্রতিবেশীকে সাহায্য সহযোগিতা করা : রাসূল সা: বলেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের একটি প্রয়োজন পূরণ করল আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার সব প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন। তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা তোমাদের ভাইকে সাহায্য করো সে অত্যাচারী হোক অথবা অত্যাচারিত হোক।’ অর্থাৎ প্রতিবেশী যদি অত্যাচারী হয়, তবে তাকে অত্যাচার থেকে বিরত রাখার মাধ্যমে সাহায্য করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পরস্পরকে ভালো কাজ ও খোদাভীরুতায় সাহায্য করবে এবং অপরাধমূলক কাজে অসহযোগিতা করবে।’ সাহায্য ও ঋণ চাইলে দিতে হবে। প্রতিবেশী পরামর্শ চাইলে সুপরামর্শ দিতে হবে।
মৌলিক চাহিদা পূরণ করা : আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তাদের সম্পদে রয়েছে প্রার্থী ও বঞ্চিতজনের অধিকার।’ ইবনে আব্বাস রা: বলেন, আমি রাসূল সা:-কে বলতে শুনেছি : ‘সেই ব্যক্তি মুমিন নয়, যে তৃপ্তিসহকারে আহার করে অথচ তার প্রতিবেশী তার পাশেই অনাহারে থাকে’ (মিশকাত)। রাসূলুল্লাহ সা: আরো বলেছেন, ‘দরিদ্র প্রতিবেশী কিয়ামতের দিন ধনী প্রতিবেশীকে জাপটে ধরে বলবে : হে প্রভু, এই ভাইকে তুমি সচ্ছল বানিয়েছিলে এবং সে আমার নিকটেই থাকত; কিন্তু আমি ভুখা থাকতাম আর সে পেটপুরে খেত। তাকে জিজ্ঞেস করো, কেন সে আমার ওপর দরজা বìধ করে রাখত এবং আমাকে বঞ্চিত করত।
প্রতিবেশীর খোঁজখবর নেয়া : রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, হে আবুজর, তুমি যখন তরকারি রান্না করো তখন তাতে পানি বেশি করে দাও এবং তা দিয়ে প্রতিবেশীর খবর নাও (মুসলিম)। হজরত ইবনে উমরের একজন ইহুদি প্রতিবেশী ছিল। যখনই তার বাড়িতে ছাগল জবাই হতো, তিনি বলতেন, আমার ইহুদি প্রতিবেশীকে কিছু গোশত দিয়ে আস (আবু দাউদ, তিরমিজি)।
বিবাদ মীমাংসা করা : পারস্পরিক বিবাদ মীমাংসা ও সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করা প্রতিবেশীর নৈতিক দায়িত্ব। আল্লাহতায়ালা বলেন, “যদি মুমিনদের দু’টি দল ঝগড়াবিবাদে লিপ্ত হয়, তবে তাদের মধ্যে ফায়সালা করবে।”
নিমন্ত্রণ করা : বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে এবং বিশেষ দিনে প্রতিবেশীকে নিমন্ত্রণ করা কর্তব্য। এ ক্ষেত্রে সমাজের ধনী-গরিব সবাইকে সমান চোখে দেখতে হবে।
উপঢৌকন প্রদান করা : উপঢৌকন আদান-প্রদানের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়, ভালোবাসা বৃদ্ধি পায় ও দ্বন্দ্ব নিরসন হয়। রাসূল সা: বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পরকে ভালোবাস এবং উপঢৌকন দাও।’ রাসূলুল্লাহ সা: আরো বলেন, ‘হে মুসলিম নারীগণ, কোনো প্রতিবেশিনী অপর প্রতিবেশিনীকে যত সামান্য উপহারই দিক, তাকে তুচ্ছ মনে করা উচিত নয়, এমনকি তা যদি ছাগলের একটা খুরও হয়’ (বুখারি, মুসলিম)।
নিকটতম প্রতিবেশীর অগ্রাধিকার : হজরত আয়েশা রা: বলেন, আমি বললাম, হে রাসূলুল্লাহ, আমার দু’জন প্রতিবেশী রয়েছে, তন্মধ্যে কার কাছে উপহার পাঠাব? রাসূলুল্লাহ সা: বললেন, তাদের মধ্যে যে জনের দরজা তোমার থেকে নিকটতর তার কাছে।
দোষত্রুটি গোপন রাখা : প্রতিবেশীর দ্বারা কোনো দোষত্রুটি সংঘটিত হলে তা গোপন রাখা একজন মুসলমানের অপরিহার্য কর্তব্য। রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষত্রুটি গোপন রাখবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষত্রুটি গোপন রাখবেন।’
নিরাপত্তা দান করা : প্রতিবেশীর জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা আবশ্যক। রাসূল সা: বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা তোমাদের ওপর তোমাদের জান, মাল ও সম্পদ হরণ করা হারাম করে দিয়েছেন।’ রাসূল সা: আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তির অত্যাচার থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয় সে মুমিন নয়।’
দু:খ ও বিপদে সান্তবনা প্রদান : প্রতিবেশীর কোনো বিপদ দেখা দিলে তা থেকে তাকে উদ্ধার করা প্রতিবেশীর দায়িত্ব ও কর্তব্য। বিভিন্ন প্রকার বিপদ আপদে তাকে সান্তবনা দিতে হবে এবং তাদের সুখে আনন্দ প্রকাশ করতে হবে।
ঝগড়া বিবাদ ও কলহে লিপ্ত না হওয়া : এক ব্যক্তি রাসূল সা:-কে বলল, ‘হে রাসূলুল্লাহ, অমুক মহিলা প্রচুর নফল নামাজ, রোজা ও সদকার জন্য প্রসিদ্ধ কিন্তু প্রতিবেশীকে কটুকথা বলার মাধ্যমে কষ্ট দেয়। রাসূলুল্লাহ সা: বললেন, সে জাহান্নামে যাবে। লোকটি আবার বললেন, হে রাসূলুল্লাহ অমুক মহিলা সম্পর্কে খ্যাতি রয়েছে যে, সে খুব কমই নফল নামাজ, রোজা ও সদকা করে; কিন্তু নিজের জিহ্বা দিয়ে প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয় না। রাসূল সা: বললেন, সে জান্নাতে যাবে।’ রাসূলুল্লাহ সা: আরো বলেছেন, কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে দুই ব্যক্তির মামলা আল্লাহর আদালতে বিচারার্থে পেশ করা হবে তারা হবে দু’জন প্রতিবেশী (মিশকাত)।
ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধান : প্রতিবেশীর ইজ্জতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে, কোনোভাবেই তার সম্মানের হানি করা যাবে না। কাউকে হেয় বা ছোট করা ও মন্দ নামে ডাকা যাবে না। রাসূল সা: বলেছেন, তিনটি গুনাহ সবচেয়ে ভয়াবহ : আল্লাহর সাথে শিরক করা, অভাবের ভয়ে সন্তানকে হত্যা করা ও প্রতিবেশীর স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করা (বুখারি, মুসলিম, নাসায়ি, তিরমিজি)।
গৃহস্খালির ছোটখাটো জিনিস ধার দেয়া : একজন মানুষ সব দিক থেকে পরিপূর্ণ হতে পারে না। সূরা মাউনের ৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘ধ্বংস তাদের জন্য যারা তাদের প্রতিবেশীকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস দিতে চায় না।’
প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়া : প্রতিবেশীর অসুবিধা হয় এমন কাজ করা যাবে না, যেমন : কটুকথা বলা, নিন্দা করা, গোয়েন্দাগিরি করা, গিবত করা, পরনিন্দা করা, তিরস্কার করা, উত্ত্যক্ত করা, গালি দেয়া, কুৎসা রটানো, খোঁটা দেয়া, গোলযোগ ও মনোমালিন্য সৃষ্টি করা, উপহাস করা, ছিদ্রান্বেষণ করা ইত্যাদি। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম সে মুমিন নয়, জিজ্ঞেস করা হলো : হে রাসূলুল্লাহ কে? তিনি বললেন, যার প্রতিবেশী তার কষ্টদায়ক আচরণ থেকে নিরাপদ থাকে না।’ রাসূলুল্লাহ সা: আরো বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস করে সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।’ ফলের খোসা এমনভাবে ফেলতে হবে যাতে করে পাশের দরিদ্র প্রতিবেশীর শিশু তা দেখে কষ্ট না পায়।
হজরত সাহল বিন আবদুল্লাহ তাসতারির ঘটনা : প্রতিবেশীর প্রতি সহিষäুতার পরিচয় দেয়া মহৎ কাজ। হজরত সাহল বিল আবদুল্লাহ তাসতারি র:-এর একজন অগ্নি উপাসক প্রতিবেশী ছিল। প্রতিবেশীর ঘর থেকে প্রতিদিন প্রচুর ময়লা-আবর্জনা তার অলক্ষে ঘরে এসে পড়ত। কিন্তু সে জন্য তিনি প্রতিবেশীর কাছে কোনো অভিযোগ করতেন না। দিনের বেলা আবর্জনা জমা করে ঢেকে রাখতেন এবং রাতে বাইরে ফেলে দিতেন। সাহলের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এলে তিনি তার প্রতিবেশীকে ডেকে আবর্জনার স্তূপ দেখিয়ে বললেন, আমার মৃত্যু ঘনিয়ে না এলে আপনাকে এটা দেখাতাম না। আমার আশঙ্কা যে, আমার মৃত্যুর পর আমার পরিবারের আর কেউ আমার মতো সহনশীলতা দেখাতে পারবে না। তাই আপনাকে দেখালাম। আপনি যা ভালো মনে হয় করুন। প্রতিবেশী অগ্নি উপাসকের বিস্ময়ের অবধি রইল না। সে সাহলের হাতে হাত রেখে ইসলাম গ্রহণ করল।
ইসলাম ও অসাম্প্রদায়িকতা : রাসূল সা: পৃথিবীর মানুষকে বললেন, সব মানুষ সমান। সবাই একজন আরেক জনের আত্মীয়। সবার বাঁচার অধিকার রয়েছে। কারো ওপর কোনো অন্যায় করা যাবে না। মদিনা সনদের একটি ধারায় বলা হয়েছে, প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম পালন করতে পারবে। কেউ কারো ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। পৃথিবীতে এত আগে এর চেয়ে অসাম্প্রদায়িক ঘোষণা আর কেউ দিতে পারেনি। কুরআনের সূরা বাকারার ২১৩ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘পৃথিবীর সব মানুষ তোমরা একটা মাত্র সম্প্রদায়।’ সূরা মুমিনুনের ৫২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের এই ধর্ম সম্প্রদায় একই জাতিভুক্ত।’ সুতরাং যে মুসলমান তার সাম্প্রদায়িক হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
উপসংহার : একবার এক ব্যক্তি রাসূল সা:-এর কাছে এসে বললন্ধ হে রাসূল, আমাকে এমন একটি কাজ বলে দিন, যা করলে আমি জান্নাতে যেতে পারব। রাসূল সা: বললেন, পরোপকারী হও। সে বলল, আমি কিভাবে বুঝব পরোপকারী হয়েছি কি না? রাসূল সা: বললেন, তোমার প্রতিবেশীর কাছে জিজ্ঞেস করো সে যদি বলে যে, তুমি পরোপকারী, তাহলে তুমি পরোপকারী (বায়হাকি)। মোটকথা একজন মুসলমান প্রতিবেশীর অধিকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিময় সমাজ গঠনে এগিয়ে আসবে।
তথ্যসূত্র: http://ipcblogger.net
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন